বিজয় দিবসে লাল-সবুজের আলোয় ঝলমলে বরিশাল

বিজয় দিবসে লাল-সবুজের আলোয় ঝলমলে বরিশাল

বাংলাদেশ সংবাদ-প্রকৃতিতে শীতের আমেজ, দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ও মুজিব বর্ষকে বরণের প্রস্তুতি, অন্যদিকে মহান বিজয় দিবসের আনন্দ যেন কোটি বাঙালির হৃদয়কে আপ্লুত করে যাচ্ছে। প্রতিবছর বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতি স্মরণ করে মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। এবার ৪৮তম বিজয় দিবস পূর্ণ হলো। পাশাপাশি ২০২০ সালের মুজিব বর্ষকে বরণ করে নিতে ধান-নদী-খালের জেলা বরিশালকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। আলোকসজ্জায় রঙিন বরিশাল যেন পরিণত হয়েছে একখন্ড লাল সবুজের পতাকায়।

শনিবার দিবাগত রাতে বরিশাল নগরীসহ জেলার গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া সহ বিভিন্ন কয়েকটি উপজেলায় এমন চিত্রের খবর গেছে। স্মরণকালের সেরা আলোকসজ্জায় জনমনে সৃষ্টি হয়েছে আনন্দ আর উচ্ছ্বাস। যেন আলোয় আলোয় মেখে দিয়েছে সমস্ত কালো। বিভাগীয় শহরসহ জেলার প্রতিটি উপজেলার সব সরকারি অফিস, স্থাপনাসহ ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবন এখন লাল-সজুজের আলোয় ঝলমলে। পথে পথে উড়ছে সারি সারি বিজয় নিশান। সর্বত্রই এ চাকচিক্য চোখে পরার মতো।

বরিশাল নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, স্থাপনা, অফিস-আদালতকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। সন্ধ্যার পর পরই লাল সবুজের আলোতে ঝলমলিয়ে ওঠে পুরো নগরী ও উপজেলা সদর। চোখ ধাঁধানো এ আলোকসজ্জার ঝলকানি মন কেড়েছে সবার। বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে লাল, সবুজ, নীল, হলুদ, সাদা, সোনালি, হরেক রঙের আলোর ব্যবহার করা হয়েছে। আলোকসজ্জার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধু সহ মুক্তিযোদ্ধের বিভিন্ন প্রতীকী এবং জাতীয় পতাকার আদলে মোহনীয় সাজে সাজানো হয়েছে পুরো বরিশাল। ফলে এবছর বিজয় দিবসের আনন্দে ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

নগরী ও উপজেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে লাগানো হয়েছে বিজয় দিবসের বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন আর পতাকা। এ সব ব্যানার ফেস্টুনে রয়েছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নের কথা ও জাতিকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা। এছাড়া বিজয় দিবসের পূর্ব মুহুর্তে পথে ঘাটে চলছে পতাকা বিক্রির ধুম। উৎসুক জনতা পতাকা কিনছেন। বাঙালি জাতি প্রতিবছর এ দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকে।

বিজয়ের মাসের শুরুতে গত ১ ডিসেম্বর আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপির বাসভবন। পাশাপাশি স্মরণকালের সেরা আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে গৌরনদী উপজেলা পরিষদসহ সরকারি অফিসগুলো। বিজয় দিবসকে সামনে রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের পাশাপাশি এসব চোখ ধাঁধানো আলোক সজ্জা সকলের দৃষ্টি কেড়েছে। সরেজমনি দেখা গেছে, উপজেলা গেট থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদ ভবন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনসহ সরকারি সকল অফিসগুলোকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে লাল-সবুজের বর্ণিল আলোক সজ্জায়। এছাড়াও বিজয় দিবসের নানান কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যান ও সরকারী গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠকে প্রস্তুত করা হয়েছে।

এদিকে ব্যতিক্রমধর্মী এ আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা গৌরনদী উপজেলার চৌকস নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান বলেন, ২০২০ সালের মুজিব বর্ষকে বরণ করে নিতে এবং এবছর বিজয় দিবসে গৌরনদী উপজেলাবাসীকে বিজয়ের আলোয় আলোকিত করতে ও বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলো আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিজয় দিবসের দিনে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভয়াল কাল রাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে নিহত শহীদ সুকান্ত বাবু সেরনিয়াবাত ব্যাড মিন্টন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। গৌরনদী অফিসার্স ক্লাবের আয়োজনে শনিবার থেকে শুরু হওয়া টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে বিজয় দিবসের দিন (১৬ ডিসেম্বর) রাতে।

সূত্রমতে, স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারাদিয়ে এ দেশের বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এই দিনেই (১৬ ডিসেম্বর) পাকিস্তানিরা মাথা নত করে বিদায় নেয়। ফলশ্রুতিতে বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন দেশের। তবে মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীন করতে ৩০ লাখ বাঙালী শহীদ হয়েছেন এবং দুই লাখ মা-বোনকে তাদের ইজ্জত দিতে হয়েছে সে সময়ে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে।

Comments are closed.

More News...

কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ সিটিসহ ২৩৩ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ভোটগ্রহণ ৯ মার্চ

নির্বাচনে কোন কর্মকর্তা নিরপেক্ষতা হারালে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : ইসি আনিছ