তথ্যপ্রযুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশের তালিকার শুরুতেই ইন্টারনেটের নাম থাকাটা স্বাভাবিক। তবে প্রসঙ্গটা যদি ইন্টারনেটের গতি নিয়ে হয়, তখন ছোট কিংবা প্রায় অস্পষ্ট জিনিসগুলোও বড় পার্থক্য তৈরি করতে পারে। ইন্টারনেট থেকে কোনো যন্ত্রে তথ্য প্রেরণ পদ্ধতির ছোট একটা অংশ হলো কনজেশন নিয়ন্ত্রক অ্যালগরিদম। এই নিয়ন্ত্রক অ্যালগরিদমটি নেটওয়ার্কের খুব ছোট একটা অংশ হলেও ইন্টারনেটের গতিতে বিশাল প্রভাব ফেলতে সক্ষম। সেই নিয়ন্ত্রক অ্যালগরিদম নিয়েই কাজ শুরু করেছে গুগল।
গত মার্চে গুগল তাদের ইউটিউবে কনজেশন নিয়ন্ত্রক অ্যালগরিদমে নতুনত্ব আনে। তখন বিশ্বব্যাপী ইউটিউবের গতি ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। কয়েকটি দেশে আবার ১৪ শতাংশ পর্যন্ত গতি বৃদ্ধি পায়। সেই সাফল্যের সূত্র ধরে গুগল এখন তাদের ক্লাউড সেবায়ও এই নিয়ন্ত্রক অ্যালগরিদমের প্রণয়ন করছে। গুগলের নতুন বোটলনেক ব্যান্ডউইথ অ্যান্ড রাউন্ড-ট্রিপ (বিবিআর) অ্যালগরিদমের মাধ্যমে গুগলের সার্চ ইঞ্জিনকে আরও গতিশীল করে তুলবে বলে জানিয়েছেন গুগলের উচ্চপদস্থ সফটওয়্যার প্রকৌশলী নিল কার্ডওয়েল।
তিনি বলেন, গুগল তাদের ইন্টারনেট গতিকে যতটা সম্ভব গতিশীল করে তুলছে। নতুন বিবিআর নিয়ে কার্ডওয়েল জানান, দুই বছর গবেষণা করে গুগল বিবিআর অ্যালগরিদমের প্রণয়ন করছে গুগল ডটকম ও ক্লাউড সেবায়। বিবিআর অ্যালগরিদম কী? এর ব্যাখ্যায় কার্ডওয়েল জানান, ইন্টারনেটে (গুগলের সঙ্গে সংযুক্ত এমন) তথ্য আদান-প্রদানের সময় কোনো প্রকার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হলে বিবিআর স্বয়ংক্রিয়ভাবে গুগল ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে দেবে। অর্থাৎ গুগলে তথ্য আদান-প্রদানের সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া রোধ করে ধীর গতিতে তথ্য স্থানান্তরের হার কমাবে বিবিআর অ্যালগরিদম।
ইতিমধ্যে অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বিবিআর অ্যালগরিদমের ব্যবহার শুরু করেছে। গুগলের ক্লাউড ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করার ওয়েব ইঞ্জিন ওয়ার্ড প্রেস সম্প্রতি বিবিআর ব্যবহারে তাদের তথ্য আদান-প্রদান গতির বড় একটা পার্থক্যের তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকাটিতে দেখা যায়, তথ্য স্থানান্তর গতি নাটকীয়ভাবেই ২৭০০ গুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি গুগল ক্লাউড ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানও নতুন বিবিআর ব্যবহার করে ইন্টারনেট আগের চেয়ে হাজার গুণ বেশি গতিশীল হয়েছে বলে দাবি করেছে। শিগগিরই বিবিআর অ্যালগরিদম ডেভেলপারদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানান কার্ডওয়েল। গুগলের বিবিআরে সাফল্য দেখে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও তাদের পদক্ষেপ অনুসরণ করবে বলে আশাবাদী গুগল।