বিএনপি নেতারা যে যেখানে ঈদ করবেন

বিএনপি নেতারা যে যেখানে ঈদ করবেন

বাংলাদেশ সংবাদ – বছর ঘুরে আবারও দরোজায় কড়া নাড়ছে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। প্রতিবছরই এই সময়গুলোতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও উৎসবের ছোঁয়া লাগে। দেখা যায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা। তবে গত তিনটি ঈদের মতো বিএনপির রাজনীতিতে এবারও সেই ঈদ উদযাপনের উৎসাহ নেই। কারণ একটাই, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। দলীয় প্রধানকে কারাগারে রেখে টানা চতুর্থবার ঈদ করতে হচ্ছে দলটির লাখ লাখ নেতাকর্মীদের। আর এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই দেশের বৃহত্তম ও অন্যতম জনপ্রিয় এই রাজনৈতিক দলটির নেতাকর্মীদের মনে ঈদের খুশিতে কিছুটা ভাটা পড়েছে। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

দলটির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন কারাগারে বন্দি, তাঁর উপর তিনি গুরুতর অসুস্থ। বারবার বিএনপি নেতারা আইনি পথে বেগম জিয়ার জামিন আবেদন করলেও জামিন পাচ্ছেন না তিনি। বিষয়টিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করছে বিএনপি। বলা হচ্ছে, গণআন্দোলন ও গণরোষের ভয়েই সরকার আদালতকে নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছে।

জানা গেছে, এবার ঈদের দিন যে কোনো সময় কারাকর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে দুই মেয়ে ও পরিবার পরিজন নিয়ে দেখা করতে যাবেন ছোট পত্রবধু সিঁথি। সঙে নিয়ে যাবেন খালেদা জিয়ার পছন্দের খাবার। চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার ব্রেকিংনিউজকে জানান, সাক্ষাৎতের জন্য দু-দিনের আবেদন করা হয়েছে। একদিন হয়তো পাওয়া যাবে। তবে সাক্ষাৎ করতে কারা যাচ্ছেন এখনও ঠিক করা হয়নি।

সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার বোন সেলিনা ইসলাম, বোনের স্বামী রফিকুল ইসলাম, ভাই সাঈদ এস্কান্দরের স্ত্রী নাসরিন সাঈদ, পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান সিঁথি, দুই মেয়ে ও তারেক রহমানের স্ত্রীর বোন শাহিনা খান ঈদের দিন দেশনেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারেন। দলের সিনিয়র নেতারাও কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করবেন বিএসএমএমইউ হাসপাতালে।

অপর দিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রায় এক যুগ ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তাই দলের প্রধান দুই নেতার একজন কারাগারে অন্যজন দেশের বাইরে থাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ঈদের আনন্দ কিছুটা ফ্যাকাসে হয়ে উঠেছে।

সাধারণত, বেগম জিয়া সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে ঈদ উদযাপন শুরু হয় দলীয় নেতাকর্মীদের। কিন্তু তিনি কারাগারে থাকায় গত বছরের মতো এবারও তা আর হচ্ছে না। তবে নেত্রীর অনুপস্থিতিতে এবার ঈদের নামাজের পরপরই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন দলটির শীর্ষ নেতারা।

এরপর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে দলের সিনিয়র নেতারা কারাবন্দি দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করবেন।

তবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই ঈদের সময় নিজ নিজ এলাকায় চলে যাবেন। আবার শীর্ষ নেতাদের অনেকেই থাকবেন ঢাকায়।

একনজরে বিএনপি নেতারা কে কোথায় ঈদ করবেন:
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান ঈদ করবেন লন্ডনে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজ গ্রাম ঠাকুরগাঁওয়ে, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মিজা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান ঢাকায় এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে ও বেগম সেলিমা রহমানের ঢাকায় ঈদ করার কথা রয়েছে।

এবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন মাহমুদ টুকু ঢাকায়, আব্দুল্লাহ আল নোমান ঢাকায়, মোহাম্মদ শাহজাহান নোয়াখালী, শামসুজ্জামান দুদু ঢাকায়, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ময়মনসিংহে, ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর ও রুহুল আলম চৌধুরী ঢাকায় ঈদ করবেন। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান ও জয়নুল আবদিন ফারুক ঢাকায়, মিজানুর রহমান মিনু রাজশাহীতে এবং হাবিবুর রহমান হাবিব নিজ নির্বাচনী আসন পাবনার ঈশ্বরদীতে ঈদ করবেন।

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গত বছরের মতো এবারও নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বরিশালে, খায়রুল কবির খোকন নরসিংদীতে, মুজিবুর রহমান সরোয়ার বরিশালে, হাবিব উন নবী খান সোহেল ঢাকায় ও আসলাম চৌধুরীর ঈদ কাটবে কারাগারে।

দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ঢাকায় ও শ্যামা ওবায়েদ ফরিদপুরে ঈদ করবেন। যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকুও ঢাকায় ঈদ করবেন। এছাড়া এবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম নিজ এলাকা টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ঈদ করবেন।

Comments are closed.

More News...

পুরুষের কাজের প্রেরণা তার প্রিয়তমা …….লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন একজন সৃজনশীল মানুষ ছিলেন