বেগম জিয়া ও তার দলের এতো বিদেশপ্রীতি কেন, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর

বেগম জিয়া ও তার দলের এতো বিদেশপ্রীতি কেন, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর

বাংলাদেশ সংবাদ- ‘বেগম খালেদা জিয়া ও তার দলের এতো বিদেশপ্রীতি কেন’ প্রশ্ন রেখেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ।
আজ বাংলাদেশ টেলিভিশন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নতুন তালিকাভুক্ত শিল্পীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন।
এসময় ‘বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে, তার চিকিৎসা হচ্ছে না, দেশের বাইরেও নিতে দেয়া হচ্ছে না’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, তিনি আদালত কর্তৃক খালাস পাননি, আদালত থেকে জামিনও পাননি। খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত দয়াপরবশ হয়ে প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে তাকে মুক্তি দিয়েছেন ছয়মাসের জন্য।’
ড. হাছান বলেন, ‘এই মুক্তির মেয়াদ একদফা বাড়ানো হয়েছে, আরো একদফা বাড়ানোর জন্য তারা আবেদন করেছেন, এটি প্রক্রিয়াধীন আছে। তাঁকে বিদেশেই নিয়ে যেতে হবে এই প্রশ্ন কেন? চিকিৎসা তো বাংলাদেশেও আছে।’
‘বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার যে কথাগুলো বলা হচ্ছে, এগুলো বহু বছরের পুরনো অসুবিধা’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তার যে আর্থরাইটিসের সমস্যা সেটি বিশ বছরের পুরনো সমস্যা। সেই সমস্যা নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং বিএনপির মতো একটি বড় দলের চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করেছেন। একই সমস্যাকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার দেখানো সমীচীন নয়।’
‘বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য, হাঁটু বা কোমরের ব্যথা নিয়ে রাজনীতি না করতে’ বিএনপিকে অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেবের উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেয়া। সেটি না দিয়ে বরং তিনি বলছেন, তাকে বিদেশ নিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশে তো অনেকেরই চিকিৎসা হয়, আমাদের অনেক এমপি এই করোনাকালে মৃত্যুবরণ করেছেন, কাউকে কিন্তু বিদেশ নিয়ে যাওয়া হয়নি। অনেকেই এদেশে চিকিৎসা করে ভালো হয়েছেন।’
‘বিএনপি একদিকে বিশেষ বিবেচনায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করে প্রধানমন্ত্রীর অনুকম্পা চাচ্ছে অন্যদিকে বলছে ‘তিনবারের প্রধানমন্ত্রী কারো করুণা নিয়ে বাঁচতে চান না’ – সাংবাদিকরা এমন বিষয় উত্থাপন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশাসনিকভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে। তারা আবার সরকারের পতনও চাচ্ছেন, আবার বলছেন আমরা কোনো করুণা চাই না।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ বিভিন্ন জায়গায় মাথাচাড়া দিয়েছে। আমরা অতীতে বিশ্লেষণ করে দেখেছি, যে সমস্ত জায়গায় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বেশি সেখানে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রকে ঘিরে যেন ব্যাপক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও উৎসব হয়।’
বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের অবস্থান চট্টগ্রামে হলেও এটি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক কোনো কেন্দ্র নয়, এটি একটি জাতীয় কেন্দ্র স্মরণ করিয়ে দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা কেন্দ্র পরিচালনার সাথে জড়িত এবং যারা শিল্পী-কলাকুশলী আছেন তাদেরও এটি মাথায় রাখতে হবে। আগে চট্টগ্রাম কেন্দ্রে গান গাইলে শুধু চট্টগ্রামেই দেখা যেতো, এখন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে কেউ পারফর্ম করলে সেটি সমগ্র দেশে দেখা যায়। একইসাথে অনুষ্ঠান পরিকল্পনা থেকে সবকিছু সমগ্র বাংলাদেশের নিরিখে করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলোতেও বাংলাদেশ টেলিভিশনের আরো ছয়টি কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সেই প্রকল্প প্রি-একনেকে পাস হয়েছে, শিগগির কার্যক্রম শুরু হবে, জানান মন্ত্রী।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে রাশেদ হাসান ও আঁখি মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিতাই কুমার ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজান উল আলম ও একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্য ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার।

Comments are closed.

More News...

কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ সিটিসহ ২৩৩ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ভোটগ্রহণ ৯ মার্চ

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন