বাংলাদেশ সংবাদ- ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর)। বিকাল ৩টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সম্মেলন উদ্বোধন করবেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই দিনব্যাপী আয়োজিত এ সম্মেলনে শেষ হবে শনিবার (২১ ডিসেম্বর)।
‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে গড়তে সোনার দেশ,এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ’ স্লোগানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দলটির এবারের জাতীয় সম্মেলন।
আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সমাপনী বৈঠকে নির্বাচন কমিশন গঠন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন দলের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। অন্য দুই সদস্য হলেন—উপদেষ্টা সদস্য ড. সাইদুর রহমান ও ড. মশিউর রহমান।
প্রথম দিন সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন। এছাড়া, এদিন সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট, শোক প্রস্তাব পাঠ করা হবে। দ্বিতীয় দিন সকাল ১০টায় বসবে সম্মেলন অধিবেশন। ওই অধিবেশন থেকে দলের পরবর্তী সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে।
স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াত ছাড়া প্রায় সব রাজনৈতিক দলকে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দলের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক রাশিদুল বাশার ডলারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বিএনপি ও জাতীয় পার্টির পাশাপাশি অন্যান্য দলের নেতাদের কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দিয়েছেন।
সম্মেলনকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে দলটি। কাউন্সিলর ও ডেলিগেট তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। মঞ্চও প্রস্তুত। সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট ও শোক প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। দলের প্রচার উপ-কমিটি বিভিন্ন প্রকাশনার পাশাপাশি উন্নয়নচিত্রের ভিডিও এবং বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার ভিডিও তৈরি করেছে। স্বাধীনতা বিরোধীদের দল জামায়াত ছাড়া নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনের জন্য নৌকার আদলে মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। মঞ্চটি হবে ডিজিটাল। এর উচ্চতা ২৮ ফুট। দৈর্ঘ্য দেড়শ ফুট। প্রস্থ ১৪০ ফুট। ২৮টি এলইডি পর্দায় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তুলে ধরা হবে। জাতীয় পতাকা ও জাতীয় স্মৃতিসৌধ শোভিত সম্মেলন মঞ্চে থাকবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি।
মঞ্চের পেছনে বসানো হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতি। একপাশে পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, মেট্রোরেলসহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলোর চিত্রের পাশাপাশি জাতীয় চার নেতা তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানের ছবি স্থান পেয়েছে। আরেক পাশে শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর কর্মতৎপরতার ছবির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের চার প্রতিষ্ঠাতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগিশের ছবি স্থান পেয়েছে। মঞ্চের সামনের অংশে পদ্মা সেতুর আদলে রেলিং তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চের পূর্বদিকে একটি নৌকায় ব্যবস্থা করা হয়েছে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের স্থান।
এদিকে, সম্মেলন উপলক্ষে অনেক কাউন্সিলর ও ডেলিগেট ইতোমধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। এবার কাউন্সিলর ৭ হাজার ৩৩৭ জন। সমসংখ্যক রয়েছে ডেলিগেটও।
সম্মেলনকে ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আচ্ছাদিত করা হয়েছে সম্মেলনস্থল। পাশাপাশি রঙিন সাজে সেজেছে ঐতিহাসিক এই স্থানটি। গাছগুলোয় রঙ করা হয়েছে। রঙবেরঙের বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে চারপাশ। সম্মেলনস্থলের বাইরে এবং দলীয় কার্যালয়ের আশপাশ ভরে গেছে পদপ্রত্যাশী নেতাদের পোস্টারে। পাল্টে গেছে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকা। উদ্যানের লেকের পাড়ে দলটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরে আয়োজন করা হয়েছে চিত্রপ্রদর্শনী। ১৯৪৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নানা সাফল্য ও চড়াই-উৎরাইয়ের খবর চিত্রপ্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। উদ্যানের ভেতর বেশ কয়েকটি স্থানে দলীয় প্রতীক বিশাল আকারের নৌকা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে ছয়টি নৌকা। উদ্যানের গাছে গাছে লাগানো হয়েছে মরিচবাতি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকায় ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। মৎস্যভবন থেকে শাহবাগ পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে শোভা পাচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি।
ইতিহাসভিত্তিক ১০ স্থাপনা নিয়ে সিআরআই
ইতিহাসভিত্তিক ১০টি স্থাপনা নিয়ে সম্মেলনস্থলে উপস্থিত থাকবে আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)। এর অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে অলঙ্কৃত করা স্থপনাগুলোর একটি ‘ওয়াক উইথ লিডার’। এখানে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি থাকবে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০তম কাউন্সিলের ইতিহাস তুলে ধরা হবে ‘রোড টু ২১ কাউন্সিল’ নামের স্থাপনায়। ‘লাইট আফটার ডারকনেস’ নামের অংশে ১৯৭৫ সালে জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পরে কীভাবে আওয়ামী লীগ এক ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে এসেছে তার ইতিহাস দেখা যাবে। আওয়ামী লীগের জন্ম ও ধীরে ধীরে বর্তমান অবস্থানে আসার পূর্ণ ইতিহাস তুলে ধরা হবে ‘এএলবিডি ইনফ্রন্ট অফ এ মিরর’ নামে।
সম্মেলনস্থলে নেতাকর্মীদের প্রবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাঁচটি গেট থাকবে। একটি গেট ভিআইপিদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। ৮১ সদস্যের মধ্যে চারটি পদ শূন্য থাকায় মূল মঞ্চে চেয়ার থাকবে ৭৭টি। মঞ্চের সামনে নেতাকর্মীদের জন্য চেয়ার থাকবে ৩০ হাজার। এছাড়া, সম্প্রসারিত মঞ্চে ১৫ হাজার চেয়ার দেওয়া হবে।
Comments are closed.
এ রকম আরও খবর
ঢাকায় নৌকার হাট
কবির হোসেন রাজধানীর খিলগাঁও থানার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের নাসিরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা।
| জাতীয়দামি জামদানি কেন লুকিয়ে রাখেন তাঁতি?
অফ হোয়াইট আর সোনালি জরির কাজ করা একটা জামদানি দেখাচ্ছিলেন
| অন্যান্যফলের মেলা
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় ফল
| জাতীয়খুদে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার
খুদে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার খুদে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার খুদে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার খুদে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার খুদে বিজ্ঞানীদের
| তথ্যপ্রযুক্তিফুলের রাজ্য
সবুজ-শ্যামল পাহাড়েঘেরা একটি অপূর্ব জায়গা হবিগঞ্জের ‘দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট’।
| জাতীয়ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাড়ি আর গাড়ি
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজট চলছে। আজ সোমবার সকাল নয়টার দিকে
| জাতীয়পানির এটিএম
এটিএমে টাকা মেলে, এটা পুরোনো কথা। কিন্তু রাজধানীতে এমন দুটি
| অন্যান্যআরেকটি পাকিস্তানি রূপকথা
কে না জানে, ক্রিকেট বিস্ময় উপহার দিতে ভালোবাসে। তাই বলে
| জাতীয়More News...