এনআরসি-ক্যাব ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়- কাদের

এনআরসি-ক্যাব ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়- কাদের

বাংলাদেশ সংবাদ- ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাস হওয়া জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধন বিল (ক্যাব)’কে দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন , ‘এনআরসি ও ক্যাব ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাস হয়েছে। সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এখানে আমাদের মন্তব্য করা ‘সমুচিত নয়’। এ বিষয়ে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অলরেডি বক্তব্য রাখা হয়েছে। আমার কোনও ভিন্ন মন্তব্য নেই।’

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে প্রত্যাগত প্রবাসী আওয়ামী ফোরাম প্রথম সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি শুধু এতটুকু বলতে চাই, শেখ হাসিনা সরকারই হচ্ছে বাংলাদেশে ৭৫ পরবর্তী একমাত্র ‘মাইনরিটি বান্ধব’ সরকার। গত ৪৪ বছরে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অন্যন্য সাধারণ উজ্জ্বল উদাহরণ হচ্ছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। মাঝে মধ্যে দুই-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়তো ঘটে। এত বড় দেশ, এত মানুষের বসবাস, এখানে দুর্বৃত্ত আছে। ভালো মানুষের পাশাপাশি দুর্বৃত্তও আছে। দুর্বৃত্ত আছে বলেই শুদ্ধি অভিযান আজকে পরিচালিত হচ্ছে। দুর্বৃত্তায়নের চক্র আমরা ভেঙে দিতে চাই। দুর্বৃত্তদের কোনও দল নেই।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশ সংখ্যালঘু নির্যাতন বলতে যেটা বুঝায়, সেই নির্যাতনের দগদগে চিত্রটা পাওয়া যাবে, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এই দেশে হিন্দুদের ওপর, মাইনরিটির ওপর যে বর্বরতা, যে নির্যাতন সেটা কেবলমাত্র ৭১ এর বর্বরতার সঙ্গে মিল রয়েছে। ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব কেন মুখে বলেন, তাদের আমলে মাইনরিটিরা ভালো ছিলো। স্বাধীন বাংলাদেশের ৪৭ বছর। ৪৭ বছরের ইতিহাসে মাইনরিটি নির্যাতনের নিকৃষ্টতম রেকর্ড হচ্ছে বিএনপির আমলে।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে কোনও বিষয়ে আমাদের সমস্যা হলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমার সমাধান করবো। জাতীয় স্বার্থের কোনও বিষয় ক্ষুণ্ন হলে সেটা পরস্পর আলাপ-আলোচনা মাধ্যমে সমাধান করবো। আমি যতটুকু জেনেছি, বুদ্ধিজীবী দিবস, বিজয় দিবসের ব্যস্ততার কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফর স্থগিত করেছেন। উনারা পরবর্তীতে যাবেন।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এবারের জাতীয় কাউন্সিল হবে সারা জাগানো শ্রেষ্ঠ সম্মেলন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন, আদর্শ দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু রাজনীতির রোল মডেল আর শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোল মডেল। আমাদের নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের পার্টি ঐক্যবদ্ধ, সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খল একটা পার্টি। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে এবার সমাবেশও হবে ব্যাপক। এই মুহূর্তে আমাদের পার্টিতে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। সারা বাংলায় আমাদের নেত্রী জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় নেত্রী। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এ দেশে এত সৎ ও জনপ্রিয় নেতা আর একজনও নেই।’

নতুন এই সংগঠনের উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রবাস থেকে প্রত্যাগত যারা, তারা একটা ফোরাম করেছেন। তাদের গঠনতন্ত্র হয়েছে কিনা এটা আমি কিছু জানি না। হলে ভালো কথা। আমাদের সরকারি দল আওয়ামী লীগ। সরকারি দলে থাকলে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে ব্যাঙের ছাতার মতো। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড লক্ষনীয় নয়, মাঝে মাঝে কিছু কিছু দিবস আসলে আলোচনা সভা করে, সভা-সমাবেশ করে। এটা খুব একটা রাজনৈতিকভাবে বেনিফিটেট হবে বলে আমার মনে হয় না।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় আসলে দেখা যায় অসংখ্য রাজনৈতিক দোকান। অনেকে দোকান খুলে বসে। তাদের সাইনবোর্ডও নেই। বাস্তবে এদের কার্যক্রমও নেই। আমি জানি না, প্রবাসী আওয়ামী ফোরাম এদের থেকে ব্যতিক্রম হবে কি না। সেটা কাজে বোঝা যাবে। এটা যেন তথাকথিত সংগঠনের মতো না হয়।’

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এবারের বিজয়ের মধ্য দিয়ে হ্যাটট্রিক জয় পাওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু নাতনি টিউলিপ সিদ্দিককে অভিনন্দন জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

প্রত্যাগত প্রবাসী আওয়ামী ফোরাম’র আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম ও দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।

Comments are closed.

More News...

কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ সিটিসহ ২৩৩ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ভোটগ্রহণ ৯ মার্চ

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন