ধীরে ধীরে যন্ত্রের মতই অনুভূতিহীন হয়ে পড়ছি আমরা- তথ্যমন্ত্রী

ধীরে ধীরে  যন্ত্রের মতই অনুভূতিহীন হয়ে পড়ছি আমরা- তথ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশ সংবাদ – তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমরা ধীরে ধীরে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছি। যন্ত্রের সাথে কাজ করতে করতে যন্ত্রের মতই অনুভূতিহীন হয়ে পড়ছি। যারা শিল্প-সাহিত্য, মানবিক মূল্যবোধের চর্চা করেন, দেশ ও সমাজ নিয়ে কাজ করেন তাদের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।’

শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে স্বাধীনতা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলামের জীবন ও কর্মভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া স্বল্পভাষী প্রাজ্ঞজন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষক ড. রফিকুল ইসলাম আমাদের সামনে এক দেশপ্রেম ও কর্মবীরত্বের অনন্য উদাহরণ। তার কাছ থেকে আমাদের শেখার কোনও শেষ নেই।’

ড. রফিকুল ইসলামকে একজন জীবন্ত ইতিহাস বর্ণনা করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সাধারণত সংবর্ধনার মাধ্যমে গুণীজনদের সম্মানিত করা হয়। আজ ড. রফিককে সংবর্ধনা দিয়ে স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনই সম্মানিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে ড. রফিকুল ইসলামকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির দায়িত্ব দিয়েছেন।’

স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. জীন্নাত ইমতিয়াজ আলী এবং কবি ও রাইটার্স ক্লাবের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নূরুল হুদা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো: মুরাদ হোসেন জুলকারনাইন।

ড. রফিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে জাতির পিতার সাহচার্য, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষকতা জীবন ও সমসাময়িক দিনপঞ্জি বর্ণনা করে তাকে সম্মাননা দেবার জন্য সকলকে ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানান।

উল্লেখ্য, দেশের প্রথম নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের জন্ম পয়লা জানুয়ারি ১৯৩৪ চাঁদপুরের মতলবের কলমাকান্দায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক ও ঢাবি’র নজরুল-গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক।

স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, বাংলা একাডেমি ও নজরুল একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত ড. রফিককে ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে সম্মাননা দেয়। তার ২০০৩ সালে প্রকাশিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ বছর’ গ্রন্থ ব্যাপক প্রশংসা পায়।

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে লেখাপড়া করেন। ভাষাতত্ত্বে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন ও গবেষণা সম্পাদনা করেন আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়, মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়, মিশিগান-অ্যান আরবর বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্ট ওয়েস্ট সেন্টারে। ১৯৫৮ সাল থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও নজরুল গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন।

তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বন্দীশিবিরে নির্যাতিত হন।

‘বাংলাদেশের সাহিত্যে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ’, ‘কাজী নজরুল ইসলাম: জীবন ও সৃষ্টি’সহ ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃত, ইতিহাস এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তাঁর ২৫টিরও বেশি গ্রন্থ রয়েছে।

Comments are closed.

More News...

হেমন্ত

পুরুষের কাজের প্রেরণা তার প্রিয়তমা …….লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল