সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে – ইলিয়াস কাঞ্চন

সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে – ইলিয়াস কাঞ্চন

বাংলাদেশ সংবাদ – নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন,’সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।’

তিনি বলেন, যেসব দেশে সড়ক দুর্ঘটনা কম সেসব দেশের মানুষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তারা সড়কের আইন, নিয়ম কানুন মেনে চলেন। যে জাতি যত সভ্য, সে জাতি তত আইন মানে। ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হতে যাওয়া সড়ক পরিবহন আইন মেনে চলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব মিলনায়তনের এস রহমান হলে ‘জীবনের আগে জীবিকা নয়, সড়ক দুর্ঘটনা আর নয়’ প্রতিপাদ্য বিষয়ে দেশজুড়ে উদযাপিত জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০১৯ এর মাসব্যাপী কর্মসূচির সমাপনী উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চন এসব কথা বলেন। নতুন সড়ক আইন সম্পর্কে নিসচার চেয়ারম্যান বলেন, ১ নভেম্বর থেকে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে সড়ক পরিবহন আইন। এই আইনে এখন সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। সড়কে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। ফিটনেসবিহীন যানবাহন, লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো, উল্টোপথে চলা, যত্রতত্র দিয়ে রাস্তা পারাপার, আইন না মানা- এই সংস্কৃতি থেকে সকলকেই বেরিয়ে আসতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ, হাউজিং ও অ্যাপার্টমেন্ট সোসাইটি, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, মসজিদ-মাদ্রাসার ইমাম ও শিক্ষক এবং সকল সামাজিক সংগঠনসহ সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে পরিবহন চালক-মালিক ও জনগণের মানসিকতা পরিবর্তনে উদ্যোগী হতে হবে।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে সারাদেশে সড়ক নিরাপত্তামূলক ১ হাজার ৩টি কর্মসূচি পালন করেছে নিসচা। সেই সঙ্গে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশেও এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। টানা ২০ দিন পথচারীদের মাঝে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং গাড়ি চালক ও যাত্রীদের মাঝেও ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার মাসব্যাপী কর্মসূচি প্রণয়নের সময় বলেছিলাম ঢাকায় শুরু করবো আর শেষ করবো চট্টগ্রামে। আর চট্টগ্রামকে বেছে নেয়ার দুটো কারণ রয়েছে। একটি হল আমরা নিরাপদ সড়ক চাই’র শুরু থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছি। সবাইকে নিয়েই সবসময় এগুতে চাই। আর দ্বিতীয় কারণটি হল চট্টগ্রাম আমার জীবনের একটি অধ্যায় হয়ে আছে। এই চট্টগ্রামেই আমি আমার জাহানারাকে হারিয়েছি। যার মৃত্যুর মধ্যদিয়ে এই আন্দোলনের সূচনা।
নিসচা চেয়ারম্যান আরও বলেন, আগের সরকার সড়ক দুর্ঘটনা নিরসন ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পর্কে তেমন আন্তরিক ছিল না। কিন্তু বর্তমান সরকার আন্তরিক ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। বিশেষ করে চালক তৈরির প্রশিক্ষণের অভাব নিরসনে প্রশিক্ষণ তৈরির প্রকল্প হাতে নেয়া, লাইসেন্সবিহীন চালকদের লাইসেন্সের আওতায় আনা, হালকা যানবাহনের চালকদের অভিজ্ঞতার আলোকে প্রশিক্ষণ প্রদান করে যোগ্যতা সাপেক্ষে ভারি যান চালানোর লাইসেন্স প্রদান, সঠিক ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালানো, সড়কে ট্রাফিক আইনের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে মনিটরিংয়ের নির্দেশনা, পথচারীদের সচেতন করে গড়ে তুলতে গণমুখী প্রকল্প তৈরি ও বাস্তবায়ন এবং সড়ক-মহাসড়কে ক্রটি নিরসনে উদ্যোগ।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন নিসচার কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব, কেন্দ্রীয় মহাসচিব সৈয়দ এহসান উল হক কামাল, নগর কমিটির সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক লিটন এরশাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আজাদ হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক শাহনেওয়াজ রিটন।
নিসচা চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমেদ সাজীবের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সাদেক হোসেন বাবুল, লায়ন গণি মিয়া বাবুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিশু, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুর রহমান আসাদ, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশন (বিএলএফ) সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন, মো. সাকিব হোসেন, মো. মহসিন খান, মোরশেদুর রহমান নয়ন, মো. মোস্তফা কামাল লিটন, সনত তালুকদার প্রমুখ।

Comments are closed.

More News...

কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ সিটিসহ ২৩৩ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ভোটগ্রহণ ৯ মার্চ

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন