শ্রমিক বাঁচলে বাঁচবে দেশ;দেশ বাঁচলে বাঁচবে সবাই

শ্রমিক বাঁচলে বাঁচবে দেশ;দেশ বাঁচলে বাঁচবে সবাই

বাংলাদেশ সংবাদ – আজ ১লা মে-২০১৯ইং, বুধবার, সকাল ১০ ঘটিকায় গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের উদ্যোগে মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে পল্টন মোড়, মুক্তাঙ্গনের সামনে বিশাল শ্রমিক সমাবেশ ও লাল পতাকা র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা বেগমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি মেসবাহদ্দীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুল আমীন, কার্যকরী সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, শ্রম অধিকার ফোরাম এর সদস্য সচিব মোঃ জাকির হোসেন, সংহতি বক্তব্য জ্ঞাপন করেন টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হোসেন, ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইলিয়াস, সহ-সভাপতি মিসেস সুইটি, যুগ্ম-সম্পাদক খাদিজা রহমান,প্রচার সম্পাদক মোঃ লিমন হাওলাদার, এছাড়াও ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় ও বেসিক ইউনিয়ন নেতা: মিসেস রিনা, মিসেস সানি, জুলফিকার, রাজিয়া সুলতানা, রাবেয়া, মোঃ রুবেল, সুমী আক্তার, মোঃ হান্নান, সুফিয়া, মোঃ খালেক, তাহেরুল ইসলাম, বিপ্লব, গ্রীণ বাংলা যুব মুভন্টে এর আহ্বায়ক শাহাদাৎ হোসাইন, সদস্য সচিব ফয়সাল মাহমুদ রাহুল প্রমুখ।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেজবাহউদ্দীন আহমেদ বলেন: আজ পহেলা মে। বিশ্বের কোটি কোটি শ্রমজীবি মানুষের অধিকার ও দাবি আদায়ের মহান ‘মে দিবস’ আজ। মে দিবস হচ্ছে গোটা পৃথিবীর শ্রমজীবি মানুষের বৈপ্লবিক পরিবর্তন সুচনা করার দিন। পুঁজিবাদী অর্থনীতির মৌলিক ত্রুটির কারণে শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের সন্তোষজনক সমাধান করা আজও সম্ভব হয়নি।

বক্তারা বলেন: দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে শ্রমিক অন্যতম অংশীদার। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চাকাকে সচল রেখেছে গার্মেন্টস শ্রমিকরা। গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিরলস পরিশ্রমের ফলে বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের গায়ের ঘাম ও রক্তমাখা কষ্টে অর্জিত টাকা দিয়ে এ দেশের গার্মেন্টস মালিকরা বড় বড় বাড়ি ও গাড়ির মালিক হয়ে বিলাসী জীবন যাপন করছে। অথচ গার্মেন্টস শ্রমিক ও তাদের পরিবারবর্গ টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় খাদ্য, বস্ত্র ও চিকিৎসায় ওষুধ যোগাড় করতে পারছে না। তারা অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে লাগামহীন বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে শ্রমজীবী মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
সভাপতির বক্তব্য সুলতানা বেগম বলেন: শ্রমিক বঞ্চনা ও শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে ন্যায্য মজুরি,নিরাপদ কর্মস্থল ও কর্মপরিবেশ, আবাসন ব্যবস্থা, রেশনিং ব্যবস্থা, সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস ঘোষনা ও শিল্প অঞ্চল ভিত্তিক ডে- কেয়ার সেন্টার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশে শ্রমিকদের অধিকার আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শ্রম অধিকার চর্চার প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগের ক্ষেত্র এখনও তৈরি হয়নি। প্রত্যেক শ্রমিক ন্যায্য মজুরী পেলে, উন্নত জীবন পাবে, কর্ম-নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে একদিকে যেমন শ্রমিক অসন্তোষ কমবে, তেমনি উৎপাদনশীলতাও বৃদ্ধি পাবে, গতিশীল হবে দেশের অর্থনীতি, যার সুফল সবাই ভোগ করবে। এ ব্যাপারে সরকার, মালিক, বায়ার এবং সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে, শ্রমিক বাঁচলে বাঁচবে দেশ, দেশ বাঁচলে বাঁচবে সবাই।
এছাড়াও বক্তারা সরকার,বিজিএমইএ ও বায়ারদের নিকট বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের এই বৃহৎ সেক্টরের শ্রমিকদের স্বার্থে নিম্নলিখিত ৬টি দাবী বাস্তবায়নের দাবী জানান।

* নিরাপদ কর্মস্থল ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত কর
* অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন চাই
* গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালু কর
* গার্মেন্টস শ্রমিকদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত কর
* শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত কর
* মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস ঘোষণা, শিল্প অঞ্চল ভিত্তিক ডে-কেয়ার সেন্টার চালু কর

সমাবেশ শেষে শ্রমিকদের লাল পতাকার বর্ণাঢ্য র‌্যালি মুক্তাঙ্গন, জিপিও পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব, তোপখানা রোড হয়ে দৈনিক বাংলা মোড় প্রদক্ষিন করে জাতীয় প্রেসক্লাবে সামনে শেষ হয়।

Comments are closed.

More News...

পুরুষের কাজের প্রেরণা তার প্রিয়তমা …….লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন একজন সৃজনশীল মানুষ ছিলেন