পাটকল শ্রমিকদের ডাকে ৯৬ ঘণ্টা ধর্মঘট চলছে

পাটকল শ্রমিকদের ডাকে ৯৬ ঘণ্টা ধর্মঘট চলছে

বাংলাদেশ সংবাদ – সারাদেশে পাটকল শ্রমিকদের ডাকে ৯৬ ঘণ্টা ধর্মঘট চলছে।

বকেয়া পরিশোধ ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে পাটকল শ্রমিকরা এ ধর্মঘটের ডাক দেয়।

সোমবার ( ১৫ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু হয়ে খুলনা অঞ্চলের ৯টিসহ সারা দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ২২টি পাটকলে একযোগে এই কর্মসূচি পালন চলছে।

এর আগে দুই দফায় রাজপথে কর্মসূচি পালন করলেও পাটকল শ্রমিকদের দাবি পূরণে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় নতুন করে এ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক নেতারা জানান।

পাটকল শ্রমিক নেতারা জানান, মজুরি বাড়ানোর দাবি পূরণ তো হয়ইনি, বকেয়া টাকা কবে নাগাদ পাওয়া যাবে তারও কোনো সুনির্দিষ্ট আশ্বাস মেলেনি।

আর সে কারণেই গত শুক্রবার ( ১২ এপ্রিল) বিকেলে খুলনা মহানগরের খালিশপুর বিআইডিসি সড়কে পিপলস জুট মিল গেটে অনুষ্ঠিত শ্রমিক সমাবেশ থেকে ৯ দিনের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ ও রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচি হচ্ছে-১৪ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রতিটি মিলের গেটে সভা ও রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল। ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ এপ্রিল টানা ৯৬ ঘন্টা উৎপাদন বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন ও প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ। এরপর বিরতি দিয়ে ২৫ এপ্রিল প্রত্যেক মিলে শ্রমিক সভা এবং ২৭, ২৮ ও ২৯ এপ্রিল টানা ৭২ ঘন্টা ধর্মঘট এবং প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ৬ ঘন্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ। 

উল্লেখ্য, জাতীয় মজুরি কমিশন-২০১৫ এর রোয়েদাদ, পাটক্রয়ের অর্থবরাদ্ধ, বদলী শ্রমিক স্থায়ীকরণ, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের সব বকেয়া পরিশোধ, শ্রমিকদের প্রতি সপ্তাহে মজুরি পরিশোধসহ বকেয়া মজুরি প্রদান, খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিলের শ্রমিকদের বিজেএমসির অন্যান্য মিলের মতো সব সুযোগ-সুবিধা প্রদানসহ ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গত কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করে আসছে। সর্বশেষ চলতি মাসের ২, ৩ ও ৪ এপ্রিল দেশের সব পাটকলে এক যোগে ৭২ ঘন্টা ধর্মঘট ও ৪ ঘন্টা করে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা। 

শ্রমিকদের ধর্মঘট ও অবরোধের কারণে মিলসহ শিল্পাঞ্চল খুলনা প্রায় অচল হয়ে পড়ে। ৯ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকে পাটকলের শ্রমিকরা। এ সময় খুলনা যশোর মহাসড়কের পাবলা পুলিশ বক্স ভাঙচুর ও ৪ পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। 

আন্দোলন চলাকালে ৩ এপ্রিল বিজেএমসির পক্ষ থেকে শ্রমিক নেতাদের আলোচনায় ডাকা হয়। ৬ এপ্রিল ঢাকায় বিজেএমসির কার্যালয়ে বিজেএমসির চেয়ারম্যান শাহ মো. নাসিমের সাথে ৯ দফা দাবি নিয়ে বৈঠকে বসেন পাটকল শ্রমিক লীগ নেতারা। 

সেই বৈঠককে শ্রমিকদের স্বার্থ আদায় না হওয়ায় বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান শ্রমিক নেতারা। ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ নেতারা জরুরি বৈঠকে বসেন। বৈঠকে জাতীয় মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, প্রতি সপ্তাহে মজুরি প্রদান, বদলী শ্রমিকদের স্থায়ীকরণ, অবসরপ্রাপ্তদের সমস্ত বকেয়া পরিশোধের দাবিতে নতুন আন্দোলন কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেন।

Comments are closed.

More News...

পুরুষের কাজের প্রেরণা তার প্রিয়তমা …….লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন একজন সৃজনশীল মানুষ ছিলেন