সমাজের মুলধারা থেকে দুরে সরে যাচ্ছে বেদে সম্প্রদায়

সমাজের মুলধারা থেকে দুরে সরে যাচ্ছে বেদে সম্প্রদায়

বাংলাদেশ সংবাদ -সুবীর দাস, নওগাঁ: বাবুরাম সাপুড়ে কোথা যাও বাপুরে, আয় বাবা দেখে যা বা অরুণ-বরুণ কীরণ মালা আমরা সাপ খেলা দেখাই, মোদের ঘরবাড়ি নাই কিংবা সারা জাগানো বিলাসী গল্পের মৃত্যুঞ্জয়। এসব রম্য ছড়া, উপন্যাস কিংবা গানগুলো সাপুড়েদের উদ্দেশ্য তাদের জীবন-জীবিকা পর্যবেক্ষণ করে, কবি, গীতিকার ও লেখকেরা লিখেছেন।

কখনও রম্য আবার কখনও ট্রেডেজি আকারে ফুটিয়ে তোলার সফল চেষ্টা করছেন তারা সাপুড়েদের জীবন। তাদের এ সকল সৃষ্টি পাঠ বা শ্রবণ করে সাধারন মানুষ কখন ও হয়েছে আনন্দিত আবার কখনও হয়েছে ব্যথিত। এসব বেদে পরিবার আজ সমাজের মুল ধারা থেকে দুরে সরে যাচ্ছে ।
সাপুড়েদের পদচারনা মুলত গ্রাম গঞ্জের হাট বাজার। জীবন বাজি রেখে বিষাক্ত সাপ ধরা এদের আয়ের প্রধান উৎস এর সাথে সাপের খেলা দেখিয়ে মানুষকে অনাবিল আনন্দ দিয়ে স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানদেও নিয়ে কোন রকমে জীবাকা নির্বাহ করছে এসব বেদে পরিবার।

অপরিকল্পিত পরিবার ব্যবস্থা আর অশিক্ষায় গড়ে উঠে বেদে পরিবারের নতুন প্রজন্ম । আগের মত এখন খুব বেশি বেদে পরিবার দেখা যায় না । তারপরও যে সংখ্যা বেদে পরিবার কাজ কওে যাচ্ছে তা সরকারের নানা সুফল বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশী সমাজের মুল ধারা থেকে দুরেই থাকছে তারা ।
এই সাপুড়েদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য তারা এক জায়গায় বেশি দিন অবস্থান করে না। জীবন ও জীবিকার দাগিদে তারা চষে বেড়ান দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে । বাস করেন তাবু টানানো খুপরি ঘরে। যাযাবরের জীবনে অভ্যস্ত তারা। শিক্ষা স্বাস্থ্যসহ মৌলিক চাহিদা অবস্থান করতো তাদেও চেয়ে অনেক দূরে।

বাপ দাদার চিরাচরিত পেশা বাদ দিয়ে ঝাঁর-ফুঁক, তাবিজ বিক্রি, চোঙ্গা লাগানো ইত্যাদি কাজে নিজেদের নিয়োজিত করেছে। প্রচলিত সমাজ কাঠামোতে বেদে পরিবার কে ঘৃনার চোখে দেখা হয় । কারন হিসাবে রয়েছে কিছু ধর্মীয় মুল্যবোধ ।

এ অঞ্চলে দলগত ভাবে সাপুড়েদের উপস্থিতি দেখা না মিললে ও কিছু কিছু স্থানে ব্যক্তিগতভাবে তারা এখনও সাপ ধরা ও খেলা দেখানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এমনই একজন সাপুড়ে নওগাঁর পত্ন‌ীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার সাদেকুল ইসলাম। বাড়ি বা জঙ্গল থেকে সাপ ধরা ও সাপের খেলা দেখানোই তার নেশা। এই নেশা তার এখন পেশায় পরিণত হয়েছে।

কারো বাড়ি থেকে সাপ ধওে ও বাজাওে সাপের খেলা দেখিয়ে যে আয় হয় তা দিয়েই চলে তার সংসার। এ বিষয়ে সাদেকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সাপ ধরা কাজটি খুবই ঝঁকিপূর্ণ। এ কাজে জীবব হারানোর ভয় থাকে। সবকিছু জেনেই জীবনের দাগিদে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

সাপের উপদপে আতস্কিত মানুষ পরিতান পাওযায় জন আমার কাছে ছুটে আসে। সাপ ধরা পড়লেই তাদের আতস্কিত চেহারা কেটে যায়। মুখে ফোটে আনন্দের হাসি। নিজে আতস্কের মধে থেকে অনকে আতস্কমুক্ত করার জন কাজ করছি। যতদিন বেঁচে থাকবো এ ভাবে মানুষের সেবা করে যেতে চাই।

Comments are closed.

More News...

পুরুষের কাজের প্রেরণা তার প্রিয়তমা …….লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন একজন সৃজনশীল মানুষ ছিলেন