বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের জন্য জিয়াউর রহমানকে অভিযুক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭১-এর পরাজিত শক্তি পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই জাতির পিতাকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে যখন তিনি দেশে ফেরেন, তখন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। রাস্তার ওপর বসে মা-বাবার জন্য মিলাদ পড়েছেন।
শোকের মাস আগস্টের প্রথম দিনে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত স্মরণসভা ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে না কিন্তু ঘটনাক্রমে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, তারাই জাতির পিতার হত্যার মূল কুশীলব ছিল।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিচারপতি সায়েমকে অস্ত্রের মুখে পদত্যাগে বাধ্য করে জিয়ার রাষ্ট্রক্ষমতা দখল এবং বিখ্যাত সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী আত্মস্বীকৃত খুনি ফারুক-রশিদের জিয়াকে মুজিব হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করা এবং জিয়া তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার কথা বলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘জিয়া এই খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেই পরে সে খুনিদের বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সব খুনির বিচার এবং অনেককে শাস্তি দেওয়া হলেও জিয়া আগেই ঘটনাচক্রে নিহত হওয়ায় তাঁকে এই হত্যার বিচারের মুখোমুখি করা যায়নি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়ার যা পরিণতি হয়েছিল, তা তাঁর অবধারিত। তবে আমার দুঃখ একটাই যে, তার বিচারটা আমি করতে পারলাম না। তার আগেই সে মরে গেল।’ তিনি বলেন, ‘জিয়া ঘাতকদের বলেছিলেন এগিয়ে যাও, আমি আছি। খুনি মোশতাক আমাদের দলেই ছিল, তবু সে বেইমানি ও মুনাফেকি করেছিল। অথচ তিন মাসও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেশের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই এ কারণে যে, তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিল বলেই আমরা ক্ষমতায় আসতে পেরেছি। খুনিদের বিচার করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে পেরেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগস্ট শোকের মাস। এ মাসে আমি হারিয়েছি আমার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের। কিন্তু জাতি হারিয়েছে দেশের অভিভাবককে। বঙ্গবন্ধু আজ বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হতো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৫ আগস্টের খুনিরা প্রতিনিয়ত আমাদের বাসায় যাতায়াত করত। বাবার কাছ থেকে নানা সুবিধা নিত। এরপরও তারা বেইমানি করেছে। তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যাই করেনি, এ হত্যার বিচার যাতে না হয় সে জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশও জারি করে।’