দূর থেকে দেখলে মনে হবে থোকায় থোকায় কলা ঝুলছে। আসলে কলা নয়, এগুলো আম। আমগাছে আমই ঝুলছে। তবে এ কোনো সাধারণ আম নয়, নতুন জাতের এই আম দেখতে অবিকল সাগর কলার মতো হওয়ায় এর নামকরণ করা হয়েছে ‘ব্যানানা ম্যাংগো’।
মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টারে গেলে এ আমের দেখা মিলবে। দেশে দু-তিন বছর হলো আমের এ জাত থাইল্যান্ড থেকে এনে আবাদ করা হচ্ছে। তবে এখনো পরিচিত হয়ে ওঠেনি। বিস্তারও ঘটেনি। গত বছর চাষি পর্যায়ে কিছু চারা বিক্রি ও বিতরণ করে হর্টিকালচার সেন্টার, যা এ বছরই চাষিদের মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছে। প্রতিদিনই মানুষ এখানে এ আম দেখতে ও চারা সংগ্রহ করতে আসছেন।
হর্টিকালচার সেন্টারের দুজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, সাধারণ জাতের সঙ্গে এ আমের শুধু চেহারার নয়, অমিল রয়েছে ফলন, স্বাদ, গন্ধ ও গুণাগুণের দিক থেকেও। যে কারণে চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে। আম্রপালি থেকে এ আম অনেক ভালো হবে।
দেশে প্রচলিত জাতের চেয়ে এ আমে ফলন দ্বিগুণের বেশি। কলার মতো দেখতে এ আম পাকলে দেশি পাকা সাগর কলার মতো রং ও চেহারা ধারণ করে। হালকা টকমিশ্রিত মিষ্টি এ আমের বৈশিষ্ট্য হলো, এর আঁটি খুব ছোট ও খোসা পাতলা। প্রকৃত আমের স্বাদ রয়েছে এ আমে, যা এখন হারাতে বসেছে।
কিছুটা নাবি এ আম পাকলে প্রায় এক মাস ঘরে রাখা যায়। এখন আমে রং আসতে শুরু করেছে। তবে প্রচলিত জাতের আমের চেয়ে ফলন দ্বিগুণ হওয়ায় এর বাণিজ্যিক গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি।
হর্টিকালচার সেন্টারের উপসহকারী উদ্যান তত্ত্ববিদ দেলোয়ার হোসেন জানান, ২০১৪ সালে থাইল্যান্ড থেকে এ আমের ডাল এনে স্থানীয় জাতের আমগাছের সঙ্গে তিনটি কলম (গ্রাফটিং) করে বংশবিস্তার করা হয়। কলম থেকে লাগানো তিনটি গাছের প্রতিটিতেই প্রথম বছর গড়ে শতাধিক করে আম ধরে। গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে কলমের কিছু চারা বিক্রি ও বিতরণ করা হয়। এ বছর উদ্যানে থাকা তিনটি গাছেই অনেক আম ধরেছে।
রাসেল পারভেজ নামের মহম্মদপুরের বালিদিয়ার ইউনিয়নের মৌশা গ্রামের এক ব্যক্তি জানান, তিনি শৌখিন চাষি। খবর পেয়ে তিনি হর্টিকালচারে এসেছেন আম দেখতে। দেখে ভালো লাগল। একটা চারাও সংগ্রহ করতে চান।
মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যান তত্ত্ববিদ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যানানা ম্যাংগো মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। প্রতিদিন এ আম দেখতে ও চারা সংগ্রহ করতে মানুষ সেন্টারে আসছেন। আমের এ জাত এখনো পরিচিতি পায়নি। তবে আম্রপালির থেকেও ভালো হবে এ আম। দুই বছরের মধ্যেই ব্যাপক ফলন পাওয়া যাবে। ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়লে এ আম সাড়া জাগাবে। আমরা সরকারিভাবে মাত্র ৬০ টাকা দামে চারা বিক্রি করছি।’