বাংলাদেশ সংবাদ- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনসহ ৩৭ জনের নামে মামলার আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ভিপি নুরের পক্ষে মামলার আবেদন নিয়ে থানায় যান ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন।
এসময় আকতার হোসেন বলেন, ‘সঞ্জিত ও সাদ্দাম হামলার নির্দেশদাতা। আমরা তাদেরকেসহ ৩৭ জনকে আসামি করে মামলা করেছি।’
নুরের করা আবেদনে বলা হয়- সময় আনুমানিক দুপুর ১২টায় আমি সংগঠনের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমার কক্ষে অবস্থান করি। হঠাৎ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আমার কক্ষে প্রবেশ করে অতর্কিতে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে চলে যান। তারা পুনরায় যেন হামলা করতে না পারে, তাই ডাকসু কর্মচারীদের সহায়তায় ডাকসুর মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসু’র এজিএস সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ডাকসুর মূল ফটকের তালা খুলে আমার কক্ষে প্রবেশ করেন। আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় দফা হামলা চালান। তারা আমার কক্ষের বাতি নিভিয়ে দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সহকারে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। হামলায় আমার ডান হাত এবং ডান পাঁজর মারাত্মকভাবে জখম হয়।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘দুপুরে নুরের পক্ষে এই আবেদন নিয়ে থানায় আসেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন। মামলার নথিটি আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।এটি পৃথক মামলা হবে না। আগের মামলাতেই অভিযোগ নথিভুক্ত করা হবে।’
আবেদনে যাদের অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয় তারা হলেন—(১) সঞ্জিত চন্দ্র দাস, সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, (২) সাদ্দাম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, (৩) আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, (৪) আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, (৫) সনেট মাহমুদ, সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, ঢাবি শাখা, (৬) ইয়াসির আরাফাত তূর্য, সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, ঢাবি, (৭) মারিয়াম জাহান খান, ভিপি, সূর্যসেন হল সংসদ, (৮) শেখ মুহাম্মদ অনিন, সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাবি ছাত্রলীগ, (৯) আঙ্গুর আলীম খান, ভিপি, এ এফ রহমান হল সংসদ, (১০) আবু ইউনুস, এজিএস, বিজয় একাত্তর হল সংসদ, (১১) রাকিবুল হাসান ঐতিহ্য, সদস্য, ডাকসু, (১২) মাহমুদুর হাসান, সদস্য, ডাকসু, (১৩) সাদ বিন কাদের চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক, ডাকসু, (১৪) রবিউল হোসেন রানা, সহ-সভাপতি, ঢাবি ছাত্রলীগ, (১৫) নিয়ামত উল্লাহ তপন, শিক্ষা বিষয়ক উপ-সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, (১৬) হাসিবুল হাসান শান্ত, জিএস, জিয়া হল সংসদ, (১৭) সিফাতুজ্জামান খান, ক্রীড়া সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, (১৮) মিজানুর রহমান মিজান, জিএস, মুহসীন হল সংসদ, (১৯) ফেরদৌস আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, (২০) আব্দুর রহিম সরকার, জিএস, এ এফ রহমান হল সংসদ, (২১) অনজিল ইমরান তালাশ, সাহিত্য সম্পাদক, এ এফ রহমান হল সংসদ, (২২) মাহমুদুল হাসান বাবু, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, ঢাবি ছাত্রলীগ, (২৩) সিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক, জিয়া হল ছাত্রলীগ, (২৪) মামুন বিন সার, সাংগঠনিক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, (২৫) ইবনুল হাসান উজ্জল, (২৬) খাজা আয়ের সুজন, উপ-স্কুল বিষয়ক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, (২৭) খান মিলন হোসেন নীরব, এসএম হল ছাত্রলীগ, (২৮) ইমরান আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, কবি জসীমউদদীন হল ছাত্রলীগ, (২৯) হৃদয় হাসান সোহাগ, গণশিক্ষা সম্পাদক, ঢাবি ছাত্রলীগ, (৩০) উজ্জল, চারুকলা ছাত্রলীগ, (৩১) আরিফুল ইসলাম, (৩২) ফাতিমা রিপা, ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, (৩৩) আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ (কামাল গ্রুপ), (৩৪) আইনুল ইসলাম মাহবুব, যুগ-সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, (৩৫) মেহেদী হাসান নিবিড় (৩৬) মেহেদী হাসান শান্ত, জিএস, বঙ্গবন্ধু হল সংসদ (৩৭) জীবন রায়, সহ-সভাপতি, ঢাবি ছাত্রলীগসহ ছাত্রলীগের অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জন নেতাকর্মী।
গত রবিবার দুপুরে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের সামনে কর্মসূচি শেষে মিছিল নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে যাওয়ার পথে হঠাৎ করে ডাকসু ভবনের সামনে নুর ও তার সঙ্গীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও ঢিল ছোড়াছুড়ি হয়। এর পরই ঘটে হামলায় ঘটনা। এতে ভিপি নুরসহ অন্তত ২৮ জন নেতাকর্মী আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
এ ঘটনায় সারা দেশে নিন্দার ঝড় উঠলে গতকাল সোমবার রাতে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয়সহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
এদিকে নুর ও তার সঙ্গীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ৩ নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
রিমান্ড পাওয়া ৩ জন হলেন- মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত তূর্য ও সংগঠনের দফতর সম্পাদক মেহেদী হাসান শান্ত। এরমধ্যে আল মামুন ও তূর্যকে সোমবার এবং মেহেদী হাসানকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামুন, তূর্য ও মেহেদী ছাড়াও মামলার এজাহারভুক্ত অপর ৫ জন হলেন- মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, ঢাবি শাখার সভাপতি এএসএম আল সনেট, এফ রহমান হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ইমরান সরকার, কবি জসীম উদ্দিন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ইয়াদ আল রিয়াদ, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব হাসান নিলয় ও জিয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মাহিম।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৪৩, ৪৪৭, ৪৪৮, ৩২৩, ৩২৪, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৪২৭ ও ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখানে ৩০৭ ধারায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
Comments are closed.
এ রকম আরও খবর
গাজীপুর জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি ডাবলিউ রহমান এর ইন্তেকাল
গাজীপুর জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি ডাবলিউ রহমান (৬৪) ২০
| অন্যান্যবঙ্গবন্ধু- লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তুমি মৃত্যুঞ্জয়ী বাঙালির জয়গান, স্বাধীনতার ডাক,
| অন্যান্যছাত্রলীগ জড়িতের প্রমাণ চাইলেন কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল
| রাজনীতিস্মার্টফোন যে কারণে গরম হয়!
প্রযুক্তিনির্ভর এই যুগে প্রায় সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। তবে স্মার্টফোনের
| তথ্যপ্রযুক্তিরোহিঙ্গাদেরকে দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন করা অপরিহার্য …..লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল
বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল
| জাতীয়লায়ন গনি মিয়া বাবুল-কে বরিশাল বাণী’র ফুলেল শুভেচ্ছা
বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার স্থায়ী
| জাতীয়সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার এর মৃত্যুতে বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের শোক প্রকাশ
দেশবরেণ্য সাংবাদিক, দৈনিক সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার এর মৃত্যুতে বঙ্গবন্ধু
| জাতীয়আলস্যে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি: দ্য ল্যানসেট
বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে আলস্যের প্রবণতা বাড়ছে। ফলে দেখা দিচ্ছে হৃদরোগ,
| লাইফস্টাইলMore News...