রেকর্ড উচ্চতায় উঠে সূচক ও লেনদেনে ধীরগতি

রেকর্ড উচ্চতায় উঠে সূচক ও লেনদেনে ধীরগতি

রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর আবারও গতি মন্থর হয়েছে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচকটির। সোমবার ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ৯৪৭ পয়েন্টের রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছিল। আর গতকাল মঙ্গলবার দিনের প্রথম ভাগে সূচকটি ৬ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। কিন্তু শেষ ভাগে এসে তা কমে নেমে আসে ৫ হাজার ৯৪৮ পয়েন্টে। তাতে আগের দিনের চেয়ে সূচকটি মাত্র ১ পয়েন্ট বেড়ে রেকর্ড উচ্চতা বজায় রাখে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটি এদিন বেড়েছে মাত্র ১৯ পয়েন্টে। সূচকের মন্থরগতির পাশাপাশি গতকাল দিন শেষে দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে।

ঢাকার বাজারে গতকাল বাজার মূলধনেও রেকর্ড হয়েছে। দিন শেষে বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকায়।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সূচক রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সংযত হয়ে পড়েছেন। একধরনের মনস্তাত্ত্বিক ভয় থেকে বিনিয়োগকারীরা এমন আচরণ করছেন। সূচক যেকোনো একটি রেকর্ড সীমা অতিক্রম করার ক্ষেত্রে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিমত।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ. হাফিজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্বজুড়েই শেয়ারবাজার খুবই স্পর্শকাতর। আমাদের বাজারে সেটি আরও বেশি কাজ করে। এ কারণে সূচক যখনই একটি সীমা বা নতুন অবস্থানে পৌঁছায়, তখন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা মনস্তাত্ত্বিক ভীতি তৈরি হয়। তাতে সক্রিয় বিনিয়োগকারীদের অনেকে সাময়িকভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। আবার সূচক নির্দিষ্ট অবস্থান অতিক্রম করলে সেসব বিনিয়োগকারী সক্রিয় হয়ে ওঠেন।’

গতকালের বাজারে দিনের শেষভাগে শেয়ারের মূল্য সংশোধনের কারণ সম্পর্কে মোহাম্মদ এ হাফিজ বলেন, ঈদের আগে যাঁরা শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে টাকা উত্তোলন করতে চান, তাঁদের জন্য গতকালই ছিল শেষ সুযোগ। এদিন যাঁরা শেয়ার বিক্রি করেছেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাঁদের লেনদেন নিষ্পত্তি হবে। আজ কেউ শেয়ার বিক্রি করলে সেই লেনদেন নিষ্পত্তি হবে ঈদের ছুটির পর। এ কারণে গতকাল দিনের শেষ ভাগে এসে অনেকে মুনাফা তুলে নিতে শেয়ার বিক্রি করেছেন। তাতে কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়েছে।

ঢাকার বাজারে গতকাল দিনের প্রথম ভাগে সূচক বেড়ে ৫ হাজার ৯৮২ পয়েন্টে উঠে যায়। এরপর লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল্য সংশোধন শুরু হলে সূচকেও তার নেতিবাচক প্রভাব লাগে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৩০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪৬টিরই দাম কমেছে, বেড়েছে ১৪২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪২টির দাম।

এদিন ঢাকার বাজারে লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯২৫ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১০৮ কোটি টাকা কম। লেনদেন কমেছে চট্টগ্রামের বাজারেও। সিএসইতে গতকাল লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ২৩ কোটি টাকা কম।

মার্চেন্ট ব্যাংক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের গতকালের বাজার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেনদেনে এদিন আধিপত্য ছিল ব্যাংক খাতের। ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ৩০ শতাংশ ছিল ব্যাংক খাতের।

ঢাকার বাজারে মঙ্গলবার লেনদেনের শীর্ষে ছিল ব্যাংক খাতের কোম্পানি আইএফআইসি। এদিন ডিএসইতে এককভাবে কোম্পানিটির প্রায় ৪১ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়। যদিও দিন শেষে এটির শেয়ারের দাম আগের দিনের ২০ টাকার অবস্থানে অপরিবর্তিত ছিল।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::